শঙ্কর ভাষ্য বৃহদারণ্যক কথন, শঙ্কর মঠ সমূহের পরস্পর বিরোধী কথা ও গীতাপ্রেসের জোড়াতালি দেয়া উক্তি
শঙ্করাচার্যের বৃহদারণ্যকের ওপর সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যাখ্যা হল বৃহদারণ্যক বার্তিক, যা সরাসরি তাঁর শিষ্য সুরেশ্বরের করা।
তো বৃহদারণ্যক বার্তিকের ৬.৪.১৭ নম্বর শ্লোকের ব্যাখ্যায় সুরেশ্বর বলছেন,
তণ্ডুলান্মাংস সংমিশ্রান্পক্ত্বা মাংসৌদনং বিদুঃ।
উক্ষা সেচনশক্তো গৌঃ স এব ঋষভো মহান্।।৭৭।।
সুরেশ্বরের বার্তিকের ওপর টীকা করেছেন আনন্দগিরি,
আনন্দগিরি বলেছেন,
মাংসৌদনং পাচয়িত্বেত্যত্র মাংসৌদনশব্দার্থমাহ৷ তণ্ডুলানিতি। ঔক্ষেণ বৈত্যাদৌ পদদ্বয়স্যাপৌনরুক্ত্যমাহ। উক্ষেতি৷।৭৭।।
যদি সরলানুবাদ করি, 'মাংসৌদনম্' শব্দ দ্বারা চাল ও মাংস মিশ্রিত রান্নাকে বোঝানো হয়েছে। 'উক্ষা' অর্থ (বীজ) সেচনক্ষম গরু (ষাঁড়), এবং যখন এটিই পরিপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায় তখন তাকে 'ঋষভঃ' বলা হয়।
আবার আনন্দগিরি ৭৮ এ বলেছেন,
ঔক্ষেণেত্যাদিবিশেষণবশাদ্গোমাংস্যাপি ভক্ষ্যত্বং প্রাপ্তং
অর্থাৎ ঔক্ষ ইত্যাদি বিশেষণ দ্বারা বশা (বন্ধ্যা) গো এর মাংস ভক্ষণের নির্দেশ রয়েছে।
তচ্চ প্রসিদ্ধিবিরুদ্ধমিত্যাশঙ্কাঽঽহ।
এবং তা প্রসিদ্ধ বিরুদ্ধ হওয়ায় শঙ্কা উৎপন্ন হচ্ছে।
অর্থাৎ যেহেতু গোমাংস ভক্ষণ প্রচলিত নয়, কাজেই কৃষ্ণমৃগের বা ছাগের মাংস ভক্ষণ করতে হবে ও তা হত্যা না করে কিনে আনতে হবে। (৭৮ ও ৭৯ অনুযায়ী)
এই উক্তিদ্বয় সরাসরি উপনিষদে বা শঙ্কর ভাষ্যে নেই, বরং বার্তিককারের নিজস্ব কল্পনাপ্রসূত।
তবে এখান থেকে আমরা যেটা বুঝলাম তা হল শঙ্কর ভাষ্যে বা বার্তিকে নিঃসন্দেহে উপনিষদের ঐ অংশের অর্থ করার সময় গোমাংস খাওয়ার কথাই বলা হয়েছে।
আধুনিক কালে যদিও এই নিয়ে পুরীমঠ ও গীতাপ্রেস গোজামিল দিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে, তবে তাদের তথাকথিত "পরম্পরা" অনুযায়ী কিন্তু শৃঙ্গেরীর কৃত অর্থই বেশি মান্য ও অথেনটিক বলে গণ্য হয়!
Tags
শঙ্করাদ্বৈত-স্মার্ত


.jpg)

