সতীর রূপ দেখে ব্রহ্মার বীর্যপাত - কালিকা পুরাণের গল্প

শিব শুম্ভু এবং দক্ষকন্যা সতীর বিবাহ মন্ডপে ব্রহ্মা, বিষ্ণু সহ অন্যান্য দেবতা এবং নারদাদি মুনি ঋষিগণ উপস্থিত ছিলেন। সতীর অপরূপ রূপ দেখে জগৎ স্রষ্টা ব্রহ্মার বীর্য পতন হয়ে যায়। ব্রহ্মার এমন নির্লজ্জ আচারণ দেখে শিব রুষ্ট হয়ে ব্রহ্মাকে ত্রিশূল দিয়ে হত্যা করতে উদ্যত হন। কিন্তু নারায়ণ সহ নারদাদি মুনিগণের অনুরোধে শিব, ব্রহ্মাকে আর বধ করলেন না।
 
[ ♣বিঃদ্রঃ— প্রজাপতি দক্ষ ছিলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার পুত্র। আর, শিবপত্নী সতী ছিলেন দক্ষের কন্যা। সুতরাং, আত্মীয়তার সম্পর্ক অনুযায়ী সতী ছিলেন ব্রহ্মার দৌহিত্রী (নাতনী)। ] 
 
★ অথ ব্রহ্মা তদা দৃষ্টা দক্ষজাং চারুহাসিনীম্ ৷
স্মরাবিষ্টমনা বক্ত্রং বীক্ষাঞ্চক্রে তদীকম্ ।। ২৭
(কালিকা পুরাণ ১১/২৭)
♦অর্থঃ– অতঃপর ব্রহ্মা, চারুহাসিনী দক্ষনন্দিনীকে (সতীকে) দেখে কামাবিষ্টচিত্তে তাঁর মুখ অবলোকন করতে (দেখতে) লাগলেন। ২৭
★ মুহুর্ম্মুহুস্তদা ব্রহ্মা পশ্যতি স্ম সতীমুখম্ ।
তদেন্দ্রিয়বিকারঞ্চ প্রাপ্তবানবশঃ পুনঃ ।। ২৮
(কালিকা পুরাণ ১১/২৮)
♦অর্থঃ– ব্রহ্মা বারবার সতীর মুখের দিকে সতৃষ্ণ নয়নে দৃষ্টিপাত করতে লাগলেন। তখন তিনি অবশ হয়ে আবার ইন্দ্রিয়বিকার প্রাপ্ত হলেন। ২৮
 
★ অথ তস্য পপাতাশু তেজো ভূমৌ দ্বিজোত্তমাঃ ।
তজ্জলদ্দহনাভাসং মুনীনাং পুরতস্তদা ।। ২৯
(কালিকা পুরাণ ১১/২৯)
♦অর্থঃ– হে দ্বিজোত্তমগণ ! তখন উজ্জ্বল দহন সন্নিভ ব্রহ্মার বীর্য, মুনিগণের সম্মুখেই ভূতলে পতিত হল। ২৯
 
★ শম্ভুনোদ্যমিতে শূলে বিধিং হন্তুং দ্বিজোত্তমাঃ ।
মরীচিনারদাদ্যাস্তে চক্রুর্হাহাকৃতিং তদা ।। ৩৩
(কালিকা পুরাণ ১১/৩৩)
♦অর্থঃ– ব্রহ্মাকে বধ করিবার জন্যে শিব শম্ভু ত্রিশূল উদ্যত করলে মরীচি, নারদাদি দ্বিজগণ হাহাকার করতে লাগলেন। ৩৩
 
★ এনাং যঃ সাভিলাষঃ সন্ বীক্ষ্যতে তং হনিষ্যসি ।
ইতি বাচন্ত সফলামেনং হত্বা করোম্যহম্ ।। ৩৭
(কালিকা পুরাণ ১১/৩৭)
♦অর্থঃ— শিব বললেন— "যে ব্যক্তি এই রমণীকে (সতী) সকামচিত্তে দর্শন করবে, তুমি তাকে বধ করবে"— বিষ্ণুর এই বাক্য, আমি ব্রহ্মাকে হত্যা করে সফল করবো । ৩৭
 
★ সাভিলাষঃ কথং ব্রহ্মা সতীং সমবলোকয়ৎ ।
অভবত্ত্যক্ততেজাস্তু ততো হন্মি কৃতাগসম্ ।। ৩৮
(কালিকা পুরাণ ১১/৩৮)
♦অর্থঃ– ব্রহ্মা, সকাম হয়ে এই সতীকে দর্শন করে স্খলিতবীর্য হলেন কেন ? যখন অপরাধ করেছে, তখন অবশ্যই তাকে হত্যা করবো। ৩৮


সারকথাঃ– পুরাণ কখনোই হিন্দুদের ধর্মশাস্ত্র হতে পারেনা। এগুলো কেবল অশ্লীল ও অযৌক্তিক সাহিত্য মাত্র। কাজেই, এসব পুরাণ ও পুরাণ নির্দেশিত আচার অনুষ্ঠান অন্ধভাবে না মেনে, প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদের পথে ফিরে আসুন। বেদের অধ্যয়ন করে মানব জীবন সফল করুন। এসব পুরাণই হিন্দু যুব সমাজের ধর্মান্তরিত হওয়ার মূল কারণ। সময় থাকতে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। 
 


 

Post a Comment

Previous Post Next Post

যোগাযোগ ফর্ম